মহামারি করোনাভাইরাস শুরুর পর থেকেই বিশ্বজুড়ে খবরের শিরোনামে চীনের উহান মার্কেট। সেখানকার একটি প্রাণিবাজার থেকেই করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। এতদিন পর এ বিষয়ে প্রথমবার মুখ খুলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
গতকাল শুক্রবার সংস্থাটি জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণে উহান মার্কেটের ভূমিকা রয়েছে। তবে সেটি কী তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরের একটি বাজার থেকেই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এ বছর জানুয়ারিতে এই ভাইরাসের বিস্তার শুরু হতেই চীনা কর্তৃপক্ষ বাজারটি বন্ধ করে দেয় এবং বন্যপ্রাণি কেনা-বেচায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই করোনাভাইরাস বিস্তারের জন্য চীনকে দায়ী করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, উহানের একটি ভাইরোলজি ল্যাব থেকে করোনার ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ তিনি দেখেছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন ইচ্ছাকৃতভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে কাছে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কিত তথ্য গোপন করেছিল।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুরু থেকেই বলে আসছে, করোনাভাইরাসের উৎস প্রাকৃতিক, এটি ল্যাব থেকে ছড়ায়নি।
সংস্থাটির এমন অবস্থানকে চীন-ঘেঁষা আখ্যা দিয়ে তহবিল স্থগিত করেছে ট্রাম্প। এমন পরিস্থিতিতে ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে তদন্তে অংশগ্রহণের জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানায় ডব্লিউএইচও। তবে সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি চীন।
শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার খাদ্য নিরাপত্তা ও জুওনোটিক ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. পিটার বেন এমবারেক বলেন, ‘সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে উহান মার্কেটের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছিল, এটি ভাইরাসের উৎস ছিল বা বিস্তার ছড়াতে সাহায্য করেছে অথবা আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে শুধুমাত্র কিছু সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তা এখনো আমরা পরিষ্কার জানি না।’
তিনি বলেন, ‘এটা এখনো স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না যে, জীবজন্তুদের থেকেই ওই বাজারের ক্রেতা বা বিক্রেতাদের শরীরে ভাইরাস ছড়িয়েছে।’ তদন্তের মধ্য দিয়েই এ সম্পর্কে যথাযথ তথ্য জানা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভাইরাস বিশেষজ্ঞ।
‘২০১২ সালে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়া মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাসের উৎস হিসেবে উটকে শনাক্ত করতে গবেষকদের এক বছর লেগে গিয়েছিল। সে হিসেবে নভেল করোনাভাইরাসের উৎস শনাক্তে এখনো খুব বেশি দেরি হয়নি’ যোগ করেন ড. পিটার বেন এমবারেক।